জন্ম
|
১৩ নভেম্বর ১৯৪৮
কুতুবপুর গ্রাম, কেন্দুয়া, নেত্রকোনা জেলা, বাংলাদেশ
|
মৃত্যু
|
১৯ জুলাই ২০১২ (৬৩ বছর)
নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
|
জীবিকা
|
লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, গীতিকার
|
জাতীয়তা
|
|
জাতি
|
বাঙালি
|
শিক্ষা
|
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়(পি.এইচ.ডি)
|
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
|
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
|
সময়কাল
|
১৯৭২-২০১২
|
ধরণ
|
উপন্যাস, ছোট গল্প,
প্রবন্ধ,
জীবনী,
কলাম,
গান
|
উল্লেখযোগ্য রচনা
|
জোছনা ও জননীর গল্প, নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, দেয়াল, মধ্যাহ্ন
|
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
|
বাংলা একাডেমী পদক
একুশে পদক
|
দম্পতি
|
গুলতেকিন আহমেদ (১৯৭৩-২০০৩)
মেহের আফরোজ শাওন (২০০৫-২০১২)
|
সন্তান
|
নোভা, শিলা, বিপাশা,
নুহাশ,
নিষাদ,
নিনিত
|
|
|
|
|
|
আলোচনাঃ
হুমায়ূন
আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ — ১৯ জুলাই, ২০১২) বিংশ
শতাব্দীর বাঙ্গালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে
বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। তিনি
একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। বলা হয় আধুনিক বাংলা
কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক
হিসাবেও তিনি সমাদৃত। ২০১১ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক। বাংলা
কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। তাঁর
বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। তাঁর অন্যতম উপন্যাস হলো নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া ইত্যাদি। তাঁর নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র হলো ''দুই
দুয়ারী'', শ্রাবণ
মেঘের দিন, উড়ে
যায় বকপক্ষী, ''ঘেঁটুপুত্র
কমলা'' ইত্যাদি।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। লেখালিখি এবং চলচিত্র নির্মাণের স্বার্থে তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাঁকে আটক করে এবং
নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।
২০১১-এর
সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর দেহে আন্ত্রীয় ক্যান্সার ধরা পড়ে। তবে
টিউমার বাইরে ছড়িয়ে না-পড়ায় সহজে তাঁর চিকিৎসা প্রাথমিকভাবে সম্ভব হলেও অল্প
সময়ের মাঝেই তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে ক্যান্সারর চিকিৎসা যখন সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে তখন
অপারেশন পরবর্তী জীবাণূ সংক্রমণে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০১২-এর
১৯শে জুলাই সারা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে এই নন্দিত লেখক চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের
নিউইয়র্ক শহরের বুলভিল হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর
মৃত্যুতে সারা বাংলাদেশে সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে অভূতপূর্ব আহাজারির সৃষ্টি হয়।
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ''নন্দিত নরকে'' উপন্যাসিকা রচনার মধ্য দিয়ে
কথাসাহিত্যের জগতে তাঁর হাতেখড়ি। সত্তর দশকের (১৯৭০)
শেষভাগে থেকে শুরু করে ২০১২-এ মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের
অপ্রতিদ্বন্দী কারিকর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের
জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত। তাঁর প্রধান
প্রতিভা অসামান্য কাহিনী সৃষ্টি। তাঁর সৃষ্ট হিমু চরিত্রটি
বাংলাদেশের যুবকশ্রেণীকে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে। একই
সঙ্গে মিসির আলি কেন্দ্রিক
রহস্যোপন্যাসগুলি লাভ করে বিশেষ পাঠকঅর্ভ্যথনা। তাঁর
নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ পেয়েছে অসামান্য দর্শক প্রিয়তা। তবে
তাঁর টেলিভিশন নাটকগুলি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। সংখ্যায়
বেশী না হলেও তাঁর রচিত গানগুলিো সবিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর
মৃত্যুর ফলে বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে এক দীর্ঘস্থায়ী শূন্যতার সৃষ্টি
হয়।
Comments
Post a Comment